ক্রিড়া-সাংস্কৃতিতেও নৈপূণ্যতা ৮৬ দিনে কুরআনে হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর, ২০১৭ ০৬:৫০ , আপডেট: ১৩ অক্টোবর, ২০১৭ ০৭:০৮

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের হাতে বৃত্তির টাকা ও পুরস্কার তুলে দেন তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের ভাইসচেয়ারম্যান বিশিষ্ট গবেষক ও শিক্ষাবিদ ড. আবু লাবিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদরাসা কক্সবাজার শাখার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হাফেজ রিয়াদ হায়দার, তানযীমুল উম্মাহ মহিলা মাদরাসা চট্টগ্রাম শাখার অধ্যক্ষ মোঃ হাবীবুর রহমান, হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের গর্বিত পিতা সাংবাদিক গোলাম আজম খান।

ইমাম খাইর, সিবিএন:
শুধু কুরআনে নয়, ক্রিড়া-সাংস্কৃতিতেও নৈপূণ্যতা দেখিয়েছে মাত্র ৮৬ দিনের কুরআনে ‌বিস্ময়কর বালক হাফেজ ইয়াসিন আরাফাত।
সহপাঠিদের পেছনে ফেলে প্রাতিষ্ঠানিক বার্ষিক প্রতিযোগিতায় ইসলামী সংগিতে ১ম, ঝুড়িতে বল নিক্ষেপে ১ম এবং কবিতা আবৃত্তিতে দ্বিতীয় স্থান করেছে।
ইতোমধ্যে এত অল্প বয়সে মহা ঐশীগ্রন্থ কুরআন মুখস্ত করায় ইয়াসিন আরাফাতকে বিভিন্ন মহল থেকে ‘বিশ্বের বিস্ময়’, ‘বিস্ময়কর বালক’ ইত্যাদি স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে কুরআনের পাখি হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের হাতে বৃত্তির টাকা ও পুরস্কার তুলে দেন তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের ভাইসচেয়ারম্যান বিশিষ্ট গবেষক ও শিক্ষাবিদ ড. আবু লাবিব।
এ সময় তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদরাসা কক্সবাজার শাখার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হাফেজ রিয়াদ হায়দার, তানযীমুল উম্মাহ মহিলা মাদরাসা চট্টগ্রাম শাখার অধ্যক্ষ মোঃ হাবীবুর রহমান, হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের পিতা সাংবাদিক গোলাম আজম খান ও সাংবাদিক ইমাম খাইর উপস্থিত ছিলেন।
১১ বছর বয়সী এই মেধাবী মুখ তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসা কক্সবাজার শাখার ষষ্ট শ্রেণীর ছাত্র। মাত্র ৮৬ দিনে পবিত্র কুরআন মুখস্ত করে পুরো মুসলিম বিশ্বে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে।
ইয়াসিন আরাফাত খান তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসা কক্সবাজার শাখা থেকে ৫ম শ্রেনীতে একমাত্র সরকারী বৃত্তি লাভ করা ছাত্র।
যে বয়সে খেলাধুলা আর দুষ্টুমিতে ছেলেদের সময় কাটে, সে বয়সে মহান আল্লাহর তিরিশ পারা কালাম নির্ভুলভাবে মুখস্ত করা সত্যিই আশ্চর্যের। সত্যিই ঈর্ষার।
হাফেজ ইয়াসিন জাতীয় দৈনিক নয়াদিগন্তের কক্সবাজার (দক্ষিণ) সংবাদদাতা গোলাম আজম খানের কনিষ্ট ছেলে। তার মা সালমা খাতুন একজন স্বার্থক গৃহিনী।
হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি অনেক ছাত্র পেয়েছি। ইয়াসিনের মতো পাইনি। তার মেধায় যাদুকরী শক্তি আছে। পড়া দেয়ার সাথে সাথে মুখস্ত করে ফেলে। শিক্ষক ডেকে হাজিরা দেয়। চমৎকার সুশৃংখল, অমায়িক ও মার্জিত হওয়ায় তার প্রতি সবার আকর্ষণটা আলাদা। ইয়াসিনের মেজাজে নেই কোন রাগডাক। সাধারণ ছাত্রদের চেয়ে ভিন্ন। সাদাসিদে ইয়াসিনের জীবন অনেক সম্ভাবনাভরা।
তিনি বলেন, সব ছাত্ররা যখন ঘুমিয়ে থাকে ওই সময়েও ওঠে পড়তে দেখেছি ইয়াসিন আরাফাতকে। সবার আগে পড়া হাজিরা দেয়ার প্রবল জেদ ছিল তার ভেতরে। ছিলনা ফাঁকিবাজির চরিত্র। আচরণ ছিল মুগ্ধ হওয়ার মতো। আমল-আখলাকে পরিপূর্ণ এই ছেলেটি অনেক বড় হবে একদিন। তার জন্য অপেক্ষা করছে স্বর্ণালী সময়।
তানযীমুল উম্মাহর অধ্যক্ষ হাফেজ রিয়াদ হায়দার বলেন, ক্লাসের হাজিরা খাতা অনুসারে মাত্র ২ মাস ২৬ দিনে তিরিশ পারা পবিত্র কুরআন শরীফ খতম করেছে ইয়াসিন আরাফাত। এখন থেকে যুক্ত হলো ‘হাফেজ’ শব্দ। যে শব্দটি কেনা যায়না। চুরি করেও মেলেনা ‘হাফেজ’ সনদ। মেধা-সাধনা দিয়ে নিতে হয় এই সনদ।
রিয়াদ হায়দার বলেন, সাধারণ ক্লাসের পাশাপাশি এত দ্রুত সময়ের মধ্যে কুরআন হেফজ করার দৃষ্টান্ত এই অঞ্চলের জন্য নজিরবিহীন। পুরো দেশে হয়তো দু’য়েকটা থাকতে পারে। হাফেজ আরাফাত পড়ালেখার সাথে পাল্লা দিয়ে পিছিয়ে নেই ক্রিড়া-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেও।
কুরআনের ফুলবাগিচার সেরা এই ফুলটির বড় ভাই আবদুল্লাহ আল সিফাত প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সালের অনার্স ভর্তি পরীক্ষায় ‘খ’ ইউনিটে উত্তীর্ণ হয়েছে।
হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের দাদা মরহুম মাস্টার ইছহাক টেকনাফের সুপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন। নানা আলহাজ্ব ছালেহ আহমদ সৌদিআরবের একজন প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী।
তার স্থায়ী নিবাস টেকনাফের হ্নীলা নয়াবাজার এলাকায়। বর্তমানে স্বপরিবারে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড সমিতিপাড়ায় থাকে।